আজ আমরা আলোচনা করব হাতেম তাইয়ের মহত্ব নিয়ে, চলুন শুরু করা যাকঃ-
হাতেম তাঈ দানশীলতার জন্য খুব সুপরিচিত ছিলেন। হাতেম তাইয়ের মহত্ব ও দানশীলতার সুনামে বাদশাহ নওফেল ক্রোধান্বিত হলেন হয়েছিলেন। কারণ তিনিও একজন দাতা ছিলেন। কিন্তু হাতেমের দানের সুখ্যাতি লোকের মুখে মুখে। বাদশাহর দান হাতেমের দানের কাছে ম্লান ও নিপ্রভ। যেন চাঁদের আলোর কাছে তারার আলো।
বাদশাহ শুধু এ কারণেই ক্রোধান্বিত হয়ে ফরমান জারী করলেন, যে কেউ হাতেমকে ধরিয়ে দিতে পারবে, তাকে প্রচুর পুরস্কার দেওয়া হবে।
ঘোষণাটি হাতেমও শুনতে পেলেন। তিনি তাঁর অবস্থানে থাকাটা নিরাপদ মনে করলেন না। তিনি এক গভীর জংগলে আত্মগোপন করে রইলেন। পুরস্কারের লোভে অনেকেই হাতেমকে হন্যে হয়ে খুঁজতে লাগল।
এক কাঠুরে ও তার স্ত্রী হাতেমের লুকিয়ে থাকা জংগলে কাঠ কাটতে এলো। স্ত্রী বাদশাহর ঘোষণার কথা স্বামীকে শুনিয়ে বলল, ‘আমরা যদি হাতেমকে পেতাম, তাহলে তাঁকে বাদশাহর নিকট হাযির করলে আমাদেরকে আর কাঠ কেটে খেতে হত না। স্ত্রীর কথা শুনে স্বামী মর্মাহত হ’ল এবং স্ত্রীকে ভতসনা করল। কাঠুরে বলল, “আমি এভাবে ধনী হতে চাই না। একজন সৎ ব্যক্তিকে বিপদে ফেলে আমি বড় হওয়াকে ঘৃণা করি।
সাগর কাপানো খাইরুদ্দিন বারবারোসার ইতিহাস ভিজিট করুন……
স্বামীর কথা শুনে স্ত্রী নীরব হয়ে রইল। হাতেম স্বামী-স্ত্রীর কথোপকথন শুনছিলেন। তিনি ভাবলেন, ‘আমার এভাবে লুকিয়ে থাকায় সার্থকতা কি? বরং আমি কাঠুরেকে ধরা দিলে তারা আমাকে বাদশাহর নিকট হাযির করে পুরস্কৃত হয়ে উপকৃত হতে পারবে।
যেই ভাবা সেই কাজ।
তিনি গোপন আশ্রয় থেকে বেরিয়ে এসে কাঠুরেকে ধরা দিলেন। কাঠুরে তাঁকে নিয়ে বাদশাহর নিকট যেতে অস্বীকৃতি জানালো এরই মধ্যে কতিপয় লোক হাতেমকে খুঁজতে খুঁজতে সেখানে এসে উপস্থিত হ’ল। তারা হাতেমকে দড়ি দিয়ে বেঁধে বাদশাহর নিকট উপস্থিত করল এবং পুরস্কার দাবী করল।
কি ঘটে তা জানার জন্য কাঠুরে ও তার স্ত্রী তাদের সাথে গেল। হাতেম বললেন, এই কাঠুরেই প্রথমে আমাকে ধরেছে। অতএব, পুরস্কার সেই পাবে। কাঠুরে বলল, ‘না, আমি তাকে মোটেই ধরিনি। তিনি স্বেচ্ছায় আমাদের ধরা দিয়েছেন। যাতে আমরা তাঁকে আপনার নিকট হাযির করে পুরস্কার পেয়ে উপকৃত হই’।
বাদশাহ কাঠুরের কথা শুনে বুঝলেন, হাতেম যাথার্থই একজন পরোপকারী ব্যাক্তি। তাই তাকে ছেড়ে দিলেন এবং কাঠুরেকে পুরষ্কৃত করলেন।
শিক্ষাঃ দানশীলতা অতি উত্তম মানবিক কাজ। এর মাধ্যমে মানুষ দুনিয়াতে মর্যাদার পাত্র হয় এবং সাথে সাথে পকালের জন্য পূন্য সঞ্চয় করে থাকে। সুতরাং আমরা যেন পরোপকারী হতে বেশি পছন্দ করি।