কি ভাবে পরিক্ষায় ৯০ শতাংশের বেশি নাম্বার পাবেন?

0
707

কি ভাবে পরিক্ষায় ৯০ শতাংশের বেশি নাম্বার পাবেন?

পড়াশুনা করতে কার ভাল লাগে!!!

যেখানে এত এত ফিচার যুক্ত মোবাইল ফোন রয়েছে। সেটা কে ফেলে রেখে এই মোটা মোটা বই থেকে বড় বড় প্রশ্ন পড়তে কারোই ভাল লাগে না। কিন্তু লেখা পড়া টা এত কষ্টকর হওয়ার কথা না মনে হয় একদম রসহীন।

কিছু এমন পদ্ধতি রয়েছে যা অনুসরন করলে এই বুরিং লেখা-পড়া কে মজার করা সম্ভব।

কিছু ছাত্র-ছাত্রী থাকে যাদের কে সবাই বই পোকা হিসেবে চিনে। তারা কিভাবে পড়া-শুনা করে যে তারা প্রতিনিয়ত ভাল নম্বর পায়!!

আর সেই রহস্য আপনাদের মাঝে নিয়ে আসার জন্য আজ এই আর্টিকেল। বিভিন্ন টপারদের ইন্টারভিউ থেকে টিপস নিয়ে হাজির হলাম এবং সাথে তাদের পড়ার ও লিখার ধরন নিয়ে। আজ এই আর্টিকেলে সেই রহস্য জানতে পারবেন।

তাই মনযোগ দিয়ে এই আর্টিকেল টি পড়তে থাকুন।

আপনি মানুন আর নাই মানুন আজ কাল সমাজে একজন স্টুডেন্টের যোগ্যতা যাচাই করা হয় তার পরিক্ষার রেজাল্টের উপর ভিত্তি করে। সেটা কি তার মুখস্ত বিদ্যা না প্রকৃত বিদ্যা তা যাচাই হয় না।

অনেক আছে যা মুখে বলতে পারে না কিন্তু লিখতে পারে আবার অনেকে বইয়ের ভিতর ছাড়া আর কিছুই জানে না।

যাই হোক এই যুগে আপনাকে যোগ্যতার প্রমান দিতে হলে অবশ্যই বেশি নাম্বার পেতে হবে এবং তার বিকল্প নেই। তাই পড়া-শুনার জন্য নাম্বার টা জরুরি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

যেখানে গ্রেট বা নাম্বার ই সব কিছু সেখানে প্রেক্টিস ছাড়া উপায় নাই।

লিখার চর্চা

আপনি যতই জানুন যতই পড়ুক তাতে লাভ নেই যদি আপনি নির্দিষ্ট সময়ে পরিক্ষার খাতায় না লিখতে পারেন, কোন লাভ নেই আর তার মানে আপনি যোগ্যতার পরিচয় দিতে পারেন নি। তাই আপনাকে লিখার চর্চা ব্যতিত উপায় নেই। লিখতে হবে নির্দষ্ট সময়ের মধ্যে। তাই এক্সামের হলে যাওয়ার আগে আপনাকে প্রচুর লিখার পেক্টিস করা লাগবে। বিগত বছরের প্রশ্ন সংগ্রহ করে সময় দরে লিখার গতি বাড়াতে থাকুন।

মক টেস্ট

পরিক্ষার প্রশ্নের সময় দরে পেক্টিস করা কেই মক টেস্ট বলা হয়ে থাকে। পরিক্ষার যোগ্যতার প্রমান দিতে আপনাকে মক টেস্টের চর্চা বা পেক্টিস করা লাগবে প্রচুর। টপার্সদের মত অনুসারে বিগত বছরের প্রশ্ন নিয়ে মক টেস্ট দিলে পরিক্ষার হলে নিজে কে ১০০% যোগ্যতার পরিচয় দিতে সহায়তা করে। তাই প্রচুর মক টেস্ট দিন আর নিজ কে যোগ্য করে তুলুন।

মক টেস্ট দিলে পরিক্ষার প্রশ্নের ধরন নিয়ে পরিষ্কার ধারানা পাওয়া যায়। সাথে কোন প্রশ্নে কত সময় ব্যয় করবেন তার একটা অভিজ্ঞতা পাবেন।

আপনি আরও খেয়াল করবেন যে, এমন অনেক প্রশ্ন বা টপিক্স আছে যা প্রায় প্রতি বছর এসে থাকে। সেদিকে আপনার অভিজ্ঞতা হবে আর আপনি সেই টপিক্সে যোর দিতে পারবেন। তাই মক টেস্ট অত্যান্ত জরুরি।

ভাল প্রেজেন্টেশন

আপনার পরিক্ষার নাম্বার অনেক খানি নির্ভব করে আপনার লিখার প্রেজেন্টেশনের উপন। ধরুন আপনি একটা প্রশ্ন খুব ভাল করে লিখলেন আপনার ধারনা আপনি ১০ থেকে ৯ পাবেন কিন্তু আপনি যাদি সুন্দর হাতে লিখা আর সুন্দর প্যারাগ্রাফ আকারে না লিখেন তাহলে আপনি ৫ নম্বর না পেতে পারেন। তাই লিখা সুন্দর করে ভাল ভাবে গুছিয়ে লিখতে হবে।

যদি আপনি ই খাতা টা দেখেন তাহলে এলমেল ও অসুন্দর লিখায় ভাল নাম্বার দিবেন না। যেহেতু শিক্ষক আপনার খাতার উপর নির্ভর করে আপনা কে নাম্বার দিবে তাই আপনি কত বুদ্ধিমান কত জানেন তা বিচার করবে না তাই খাতার ভাল হতে হবে।

যেহেতু তারা কম সময়ে অনেক খাতা দেখেন তাই তার আশা করে যে আপনি পরিষ্কার করে গুছিয়ে লিখবেন যাতে সহজে ও কম সময়ে পড়া যায়।

কি লিখছেন এবং কি ভাবে লিখছে দুটাই সমান জরুরি।

কি ভাবে ভাল প্রেজেন্টেশন করবেন?

কি ভাবে পরিষ্কার ও গুছিয়ে লিখবেন?

১। যা জানতে চাওয়া হয়েছে ঠিক ততটুকুই সংখেপে উত্তর লিখুন।

২। উত্তরের মধ্যে বেশি গুরত্ব পূর্ণ শব্দ গুলো চাইলে আন্ডারলাইন করতে পারেন তবে এক প্রশ্নে ৪/৫ টার বেশি করবেন না।

৩। যতদূর সম্ভব উত্তর পয়েন্ট আকারে লিখুন।

৪। প্রতি টি প্রশ্নের ঊত্তর শেষে দু লাইন ফাকা রেখে পরের প্রশ্নের উত্তর শুরু করুন।

৫। ৪নাম্বারের উপরের প্রশ্ন হলে পরের পেজ থেকে শুরু করুন। কারন কোন পেজের শেষের থেকে কোন নতুন প্রশ্ন শুরু না করাই ভাল।

৬। হাতের লিখা পরিষ্কার রাখার চেষ্টা করুন তাই বলে বইয়ের মত হতে হবে এমন নয় সহজে পড়তে পারলেই হল। অতি সুন্দর করতে গিয়ে সময় নষ্ট করা উচিত নয়।

৭। চেষ্টা করুন প্রশ্নের ধারাবাহিকতা বজায় রেখে ঊত্তর লিখতে।

পড়ায় দূঢ়তা ও সামঁজস্যতা

আপনাকে লেখা পড়ায় দূঢ়তা ও সামঁজস্যতা থাকতে হবে। আপনাকে প্রতিদিন অল্প অল্প করে পড়তে হবে তাতে করে আপনার ব্রেইন আসতে আসতে তা মাথায় জমা করবে এবং তার স্থায়িত্ব পাবে।

একজন টপার স্টুডেন্ট কখনও পরিক্ষার আশায় বসে থাকে না তারা রুজ অল্প অল্প করে পড়তে থেকে। তাই আপনাকে পড়ায় দূঢ়তা রাখতে হবে।

পাশা-পাশি আপনাকে এক প্রশ্নের সাথে অন্য সামঁজস্য প্রশ্ন গুলিও পরতে হবে তাতে করে সহজে সামঁজস্য প্রশ্ন গুলি সহজে আপনার মাথায় গেথে যাবে।

পরে পরিক্ষার আগে শুধু পড়া গুলোতে চোখ বুলিয়ে নিলেই হয়। খাওয়া দাওয়া ছেড়ে দিয়ে পড়ার চাপ থেকেও বাচায়। তাই আপনাকে পড়ার জন্য সময় বের করে নিতে হবে দরকার হলে অন্য আন্য দিকে সময় কমাতে হবে। যেমন অনলাইনে সময় কমিয়ে পড়ায় সময় বাড়াতে হবে।

পরিক্লপনা করা

পৃথিবির সব কাজেই পরিক্লপনার প্রয়োজন হয়। পরিক্লপনা ব্যবতিত কোন কাজে সমফল হওয়া যায় না। তেমনই আপনাকে পড়া-শুনা করার জন্য পরিক্লপনা করতে হবে। প্রতি টা টপার তাদের পড়া শুনার জন্য প্লান পরিক্লপনা করেন। নির্দিষ্ট সময়ে সিলেবাস শেষ করার।

যেমন আপনার কিছু দূর্বল বিষয় থাকতে পারে সে সবে বেশি সময় দিতে হবে। এমন কি টপাররা ও এমন টাই করে থাকে। তারা সে সব সাব্জেক্ট এ বেশি সময় দেয়। আর আপনি সেই বই টি পড়তে চান না এটাই আপনার আর টপারদের মধ্যকার পার্থক্য। তাই আপনি যে সাব্জেক্টে দূর্বল সে বিষয়ে এক্সট্রা সময় দিন।

পরিক্লপনার জন্য যা যা করবেন?

এলার্মঃ- প্রতিদিন পড়তে বসার জন্য এলার্ম ব্যাবহার করুন। যেন পড়তে বসা টা আপনার অব্যাশে পরিণত হয়।

রুটিন তৌরি করুনঃ- প্রতিদিনের পড়ার একটা রুটিন করে সেট টেবিলের সামনে বা সহজে চোখে পরে এমন স্থানে লাগিয়ে রাখুন যেন চলতে ফিরতে আপনার চখে পরে।

টার্গেট লিস্টঃ- প্রতি সপ্তাহে বা ১৫ দিনে আপনি কি কি পড়ে শেষ করবেন বা কোন কোন বিষয় কতটুকু পড়বেন তার একটা টার্গেট লিস্ট তৌরি করুন।

সময় নির্ধারনঃ- প্রতি টি পড়া শেষ করা আগে সময় নির্দারন করুন এবং চেষ্টা করুন উক্ত সময়ে শেষ করতে। না পারলে চিন্তা করুন এটা চালিয়ে যাবেন না পরের টা শুরু করবেন।

চিত্তবিনোদন পরিহারঃ- বর্তমানে আপনার প্রচুর সময় খেয়ে নিচ্ছে আধুনিক চিত্তবিনোদন গুলো যথা ফেসবুক, ইমো , হোটাস এপ, টিকটক, লাইকি, বিগু ইত্যাদি। এ গুলা শুধু আপনার সময় নিচ্ছে আর তাদের ব্যবসা করে যাচ্ছে। আপনি পরিক্ষায় ফেল করলে তাদের কিছু আসে যায় না।

জীবনে চিত্তবিনোদনের জন্য অনেক সময় পাবেন। কিন্তু পরিক্ষা ও পড়া লেখার সময় একটা সময় ফুরিয়ে যাবে।

তবে বর্তমানে এ গুলো থেকে একভারে বের হওয়া সম্ভব না তাই সময় কমিয়ে দিন।

মনে রাখবেন আজ যার সাথে এত সময় দিচ্ছেন সেই আপনেকে নিয়ে তামসায় মেতে ঊঠবে আপনি পরিক্ষায় ফেইল করলে। আপনার জীবন আপনাকেই সামলাতে হবে। তাই মন কে কন্ট্রোল করতে শিখুন মন আপনাকে কন্ট্রোল করার আগেই।

পরিশেষে আপনাকে বলব

আজ থেকে আপনি আর্টিকেল টি অনুসরণ করুন। পুরুটা না করতে পারলেও অল্প চেষ্টা করুন। আমাদের কথা শুনে দুদিন ট্রায় করে দেখুন, আপনি নিজেই বুঝতে পারবেন।

কিছু বলার বা জিজ্ঞসা করার থাকলে কমেন্ট বক্সে আপনার মূল্যবান কমেন্ট করুন আমরা আছি আপনার সহযোগিতায়।

ইনশাল্লাহ।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here