নেতৃত্ব লাভের উপায় নিয়ে আজ আলোচনা করব ইনশাআল্লাহ। টাইটেল দেখেই বুঝতে পেরেছেন আশা করি।
একজন নেতার উদ্যোগ, তদারকি, উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা কর্মীদের মধ্যে কর্মস্পৃহা জাগ্রত করে ও কার্য সম্পাদনের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে। নেতৃত্ব কর্মক্ষেত্রের সর্বোচ্চ অবস্থানে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নেতৃত্বের এমন কিছু অপরিহার্য বিষয় নিচে সংক্ষেপে তুলে ধরা হলো—
মোহনীয় ব্যক্তিত্বের অধিকারী হওয়া
ভালো দলনেতা আন্তরিক হন এবং প্রশংসার মাধ্যমে তার কর্মীদের উৎসাহিত করেন। নেতাকে সব সময় তার অধস্তনরা অনুসরণ করে। তাই তাকে হতে হয় ধৈর্যশীল, সৎ ও ন্যায়পরায়ণ।
জ্ঞান পিপাসু হওয়া
একজন নেতাকে বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের সাধারণ ও প্রযুক্তিগত জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতার অধিকারী হতে হয়। অন্যের থেকেও শিক্ষা নিতে হয়। যুগের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে জ্ঞান অন্বেষণে সদা তৎপর থাকতে হয়।
নির্দিষ্ট লক্ষ্য নির্ধারণের দক্ষতা থাকা
একজন ভালো দলনেতার প্রধান গুণ হলো লক্ষ্য ও কৌশল সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা থাকা। এক্ষেত্রে কর্মীর কাজ নির্দিষ্ট করে দেবার পাশাপাশি নির্দিষ্ট সময়ের মাঝে ছোট ছোট কাজের লক্ষ্য নির্ধারণ করে দিতে হয়।
ভালো পরিকল্পনাকারী হওয়া
নেতৃত্ব লাভের উপায় সমূহের মধ্যে ভালো পরিকল্পনাকারী একটি। ভালো ও দক্ষ দলনেতা নিজের অভিজ্ঞতার সাথে তার দলের সদস্যদের চিন্তাভাবনা সমন্বয় করে পরিকল্পনা গ্রহণ করেন এবং দলকে এগিয়ে নেয়ার জন্য কাজ করেন।
সঠিক সিদ্ধান্ত নেয়া
সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করা নেতৃত্বের অন্যতম অংশ। তাই নেতাকে সকলের সাথে কথা বলে তাদের সমস্যাগুলো বুঝে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়ার দক্ষতা অর্জন করতে হয়। আর সঠিকভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ নেতৃত্ব লাভের উপায় সমূহের নূন্যতম।
সহযোগিতামূলক মনোভাব থাকা
একজন দলনেতাকে অধস্তনদের প্রতি সহযোগিতার মনোভাব রাখতে হয়। তাদেরকে কাজে উৎসাহ দিতে হয়। এছাড়াও প্রয়োজনে তিনি প্রতিষ্ঠানের অন্য দলগুলোকেও সহযোগিতা করেন। নেতৃত্ব লাভের উপায় সমূহের মধ্যে এটি অত্যন্ত গুরত্বপূর্ণ।
ভালো শ্রোতা ও শিক্ষক হওয়া
দলনেতাকে তার কর্মীদের বুঝতে ভালো শ্রোতা হতে হয়। আবার কর্মীদের মাঝে তার জ্ঞানকে সহজেই শেয়ার করতে ভালো শিক্ষক হতে হয়। যাতে কর্মীরাও দক্ষ হয়ে উঠতে পারে।
যোগাযোগ দক্ষতা থাকা
যোগাযোগ দক্ষতা নেতার একটি গুরুত্বপূর্ণ গুণ, যা সম্পর্ক উন্নয়নের মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে সহায়তা করে।
ঝুঁকি গ্রহণের ক্ষমতা আয়ত্ত করা
প্রতিষ্ঠানে বিভিন্ন পরিস্থিতিতে নেতাকে দায়-দায়িত্ব নিয়ে ঝুঁকি গ্রহণ করতে হয়। করে তাই তাকে এ ক্ষমতা আয়ত্ত করতে হয়।
দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের দক্ষতা থাকা
নেতাকে সব ধরনের পরিস্থিতি সম্পর্কে সচেতন থাকতে হয়। প্রতিষ্ঠানে বিভিন্নমুখী প্রয়োজনে তাকে বিকল্প কর্মপন্থা উদ্ভাবনসহ দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয়।
আবেগ নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা থাকা
আবেগ ব্যক্তিত্বকে দুর্বল করে দেয়। একজন সফল নেতাকে অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির মুখোমুখি হলে আবেগ নিয়ন্ত্রণ করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে হয়।
দূরদর্শিতা থাকা
পূর্বানুমান সঠিক হলে পরিকল্পনা প্রণয়ন ও প্রতিষ্ঠান পরিচালনায় সুফল পাওয়া যায়। তাই নেতাকে দূরদর্শী হতে হয়।
কাজের পরিবেশ নিশ্চিত করা
নেতাকে দলের সকলের নির্বিঘ্নে কাজ করার পরিবেশ সৃষ্টিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হয়। তিনি অধস্তনদের মত প্রকাশের সুযোগ সৃষ্টিতেও ভূমিকা রাখেন।
সময় সদ্ব্যবহারের দক্ষতা থাকা
প্রতিষ্ঠানের অগ্রযাত্রা সমুন্নত রাখতে নেতার সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত – নেবার ক্ষমতা থাকতে হয়। একজন সফল নেতাকে দলকে সঠিক দিক নির্দেশনায় সফলতার পথে এগিয়ে নিতে হয়।
নতুন কিছু করার চেষ্টা করা
কোনো কিছুতে একটি সাধারণ কার্যপদ্ধতি মেনে চলা স্বাভাবিক, কিন্তু সেই সাথে কীভাবে কাজ করলে আরো ভালো ফল আসবে— সফল নেতাকে এটাও বিবেচনায় রাখতে হয়।
পরিশেষে
নেতৃত্ব শুধু কর্মজীবনে নয় ব্যক্তিজীবনেও সাফল্য লাভে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাই ওপরের বিষয়গুলি আয়ত্ত করতে পারলে সঠিক নেতৃত্ব দিয়ে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হয়।
এরকম কর্ম কৌশল নিয়ে লেখা পেতে আমাদের সাথেই থাকুন। আমাদের ফেইসবুক পেইজ। আপনিও আপনার লিখা লিখতে পারেন ইরাকক্সে।
মন্তব্য করতে ভুলবেন না।