রবীন্দ্রনাথের সব বইগুলো চমৎকার। চোখের বালি ও ঠিক তেমনি, অসাধারণ ও চমৎকার
চলুন শুরু করা যাক চোখের বালি নিয়ে…..চোখের বালি রবী ঠাকুরের লেখা একটি অন্যতম উপন্যাস। গল্পের নায়ক মহেন্দ্র ও তার মা রাজলক্ষীর কথোপকথনের মধ্যে দিয়েই এই গল্পের সূচনা হয়েছে।
স্বামীহারা রাজলক্ষীর একমাত্র আদরের ছেলে মহেন্দ্র। সমাজের নিয়ম অনুযায়ী তাকে ও বিয়ের জন্য তার মা আকুতি পোষণ করেন।কিন্তু মহেন্দ্র বিয়েতে প্রথমে অমত করে।কারণ,বিয়ে করলে তার মায়ের সুখ কমে যাবে।তাদের মা-ছেলের সম্পর্কে পাটল ধরতে পারে।এইসব, চিন্তা করে অমত প্রকাশ করে।
পরবর্তীতে বন্ধু বিহারীর বিয়ের জন্য পাএী দেখতে গেলে পাএীকে অর্থাৎ, আশাকে দেখে তার পছন্দ হয়ে যায়,এবং আশাকে বিয়ে করার কথা বন্ধুকে জানায়।বিহারী ও এতে কোন বাধা দেয়না।আশার সাথে মহেন্দ্রের বিয়ে হয়ে যায়।
বিয়ের পর থেকেই পুএবধূ আশার উপর ক্রব্ধ হয়ে ওঠেন রাজলক্ষী।এর প্রধান কারণ,আশাকে কাছে পেয়ে মহেন্দ্র তার মা এবং অন্য সবাইকে এক প্রকার ভুলে যেতে বসেছে।বেশিরভাগ সময়ই তারা দুজন একসাথে কাটায়।এরই মধ্যে একদিন বিনোদিনী মহেন্দ্রদের বাসায় এসে উপস্থিত।
বিনোদিনীকে সহজ সরল একটু বোকা ধরণের মেয়ে আশা আপন করে নেয়।মহেন্দ্রের বন্ধু বিহারীর প্রতি বিনোদিনীর দুর্বলতা প্রথম দিকেই অনুমান করা যায়।কিন্তু,তার প্রতি বিহারীর কোনো আকর্ষণ প্রকাশ পায়না।এতে বিনোদিনী রাগে,অভিমানে আশার প্রতি হিংসা আরো বাড়তে থাকে।আশা বিনোদিনীকে যতটা আপন ভেবেছে বিনোদিনী কিন্তু, ততটা ভাবেনি।আশার বিশ্বাসটাই একদিন তার জীবনে কাল হয়ে দাড়ায়।
স্বামীকে সে নিজের থেকেও বেশি বিশ্বাস করে।বিনোদিনীকে বোনের চেয়ে বেশি ভালোবাসে।কিন্ত, তারা সেই বিশ্বাস আর ভালোবাসার দাম দেয়নি।তাকে দুজনে মিলে ঠকিয়েছে।বিনোদিনী আশার সরলতাকে কাজে লাগিয়ে মহেন্দ্রকে তার প্রতি আকৃষ্ট করতে ব্যাকুল হয়ে পড়ে।পরবর্তীতে সে সফল ও হয়।মহেন্দ্র ও বিনোদিনীর প্রতি দুর্বল হয়ে পড়ে।এরপরই শুরু হয় আশার করুণ জীবন।তার জীবনের সেই অধ্যায় গুলো সবারই হৃদয়ে দাগ কাটবে।এভাবেই একটি এিভূজ প্রেমের সমীকরণ ক্রমশই ভয়ংকর আকার ধারণ করে।
ব্যক্তিগত মতামতঃ-
এই বইয়ের মাধ্যমে খুব সহজেই বুঝা যায় যে,কাছের মানুষ ইচ্ছা করলে একটা সংসার গড়ে ও দিতে পারে আবার ভাংতে ও পারে।মানুষকে বিশ্বাস করা ভালো কিন্তু, এমনভাবে অন্ধ বিশ্বাস না করাই ভালো। যে অন্ধ বিশ্বাস সংসার জীবনের সবকিছু তোলপাড় করে দেয়।
বুক রিভিউ
চোখের বালি
লেখকঃরবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
রিভিউ লেখিকাঃ জামিলুন মুনতাহা