সুশীল সমাজ সর্বদা গণতন্ত্রে বিশ্বাসী। সুশীল সমাজ সমাজের বিভিন্ন উন্নয়ন তথা সমাজের মানুষের অধিকার, দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। উন্নয়নশীল দেশ সত্যিকার স্বাধীনতার সুফল পেতে সুশীল সমাজ অগ্রনী ভূমিকা পালন করে।
আজ আমরা একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে সুশীল সমাজের ভূমিকা নিয়ে আলচনা করব। চলুন শুরু করা যাক-
→ নিম্নে উন্নয়নশীল দেশে গণতন্ত্রায়ণে সুশীল সমাজের ভূমিকা আলোচনা করা হলো:
সাংবিধানিক সরকার প্রতিষ্ঠা :
গণতান্ত্রিক চেতনায় সাংবিধানিক সরকার প্রতিষ্ঠায় সুশীল সমাজ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। সাংবিধানিক সরকার একটি বৈধ সরকার। সংবিধানিক সরকার প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে জনগণের গুরুত্ব মূল্যায়নের প্রতিফলন ঘটে।
সৎ ও যোগ্য প্রার্থী নির্বাচন :
সৎ ও যোগ্য প্রার্থী নির্বাচনে সুশীল সমাজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দুর্নীতিগ্রস্ত, ঋণখেলাপি, অসৎ, অযোগ্য ব্যক্তি যাতে নির্বাচনে অংশ নিতে না পারে সুশীল সমাজ তার জন্য কাজ করে ।
স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন :
একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করা একটি অত্যবশ্যকীয় কাজ। একটি গণতান্ত্রিক উন্নয়নশীল দেশে ভয়হীন, স্বাধীন, স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠান করতে সুশীল সমাজ নির্বাচন কমিশনকে বাধ্য করে।
জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা :
জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় সুশীল সমাজ সর্বদা তৎপর। জনগণের অধিকার ভোগ গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার অন্যতম বৈশিষ্ট্য। জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সুশীল সমাজ কাজ করে।
আইনের শাসন :
সুশাসন প্রতিষ্ঠায় পূর্বশর্ত হলো আইনের শাসন। গণতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠায় আইনের শাসন গুরুত্বপূর্ণ। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সুশীল সমাজ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে ।
স্বাধীন বিচারব্যবস্থা :
স্বাধীন বিচারব্যবস্থা গণতন্ত্রের পূর্বশর্ত। স্বাধীন বিচারব্যবস্থা সমাজের ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমন নাগরিকের অধিকার রক্ষায়ও গুরুত্বপূর্ণ। উন্নয়নশীল রাষ্ট্রে গণতন্ত্রায়নের জন্য স্বাধীন বিচারব্যবস্থা অপিরিহার্য।
প্রশাসনিক জবাবদিহিতা :
শাসন বিভাগ তার উপর অর্পিত ক্ষমতা বা কার্যবলির ক্ষেত্রে প্রশাসনিক জবাবদিহিতা আবশ্যক। শাসন বিভাগের কার্যবলির জবাবদিহিতা নিশ্চিত হলে সুশাসন নিশ্চিত হবে। তাই প্রশাসনিক জবাবদিহিতা নিশ্চিতকরণে সুশীল সমাজ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে থাকে ।
জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল :
গণতন্ত্রের প্রধান উপাদান হলো জনমত। সুশীল সমাজ জনমতের উপর সর্বদাই গুরুত্ব প্রদান করে থাকে। সুশীল সমাজ জনমত সৃষ্টি করে গণতন্ত্রায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে।
জাতিগত বিরোধ নিরসন :
উন্নয়নশীল দেশে বিভিন্ন গোষ্ঠীর জাতি, উপজাতি বসবাস করে। অনেক সময় এরা নিজেদের মধ্যে বিভিন্ন সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে, সুশীল সমাজ গোষ্ঠী, জাতি ও উপজাতির এসব সংঘাত নিরসনে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে ৷
দুর্নীতি প্রতিরোধ :
গণতন্ত্র বিকাশে দুর্নীতি একটি বড় ধরনের প্রতিবন্ধকতা। সুশীল সমাজ দুর্নীতি প্রতিরোধ করে গণতন্ত্র বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।
জনগণকে গণতান্ত্রিক চেতনায় উদ্বুদ্ধকরণ
সুশীল সমাজ সবসময় গণতান্ত্রিক মনের হয়ে থকে। এজন্য সুশীল সমাজ জনগণকেও গণতান্ত্রিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে গণতন্ত্র রক্ষা ও বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
পরিশেষে বলা যায়, একটি উন্নয়নশীল দেশের গণতন্ত্র বিকাশে সুশীল সমাজ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।সুশীল সমাজ একটি রাষ্টের সরকারের কার্যাবলি নিয়ন্ত্রণ করে আইনের মাধ্যমে, স্বচ্ছতা ও জবাব্দিহিতার মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠিত করে। সুতরাং সুশীল সমাজই হলো সমাজের সেই অগ্রগামী গোষ্ঠী যারা গণতন্ত্র ও মানবাধিকার এবং সুশাসন প্রতিষ্ঠায় সদা তৎপর।