Home রাষ্ট্রবিজ্ঞান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তথা বিশ্ব মুড়ল – বিশ্ব রাজনীতিতে একক প্রধান্যের কারণ।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তথা বিশ্ব মুড়ল – বিশ্ব রাজনীতিতে একক প্রধান্যের কারণ।

0

বিশ্ব মুড়ল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে আবির্ভাব দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর। এ সময় কালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি সোভিয়েত ইউনিয়ন পরাশক্তি হিসেবে আত্মপ্রকাশ করে। উভয় পরাশক্তির আত্মপ্রকাশের ফলে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে দ্বিমেরু প্রবণতা এবং স্নায়ুযুদ্ধের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। বিশ্ব রাজনীতিতে উভয় রাষ্ট্রের অপ্রতিহত ক্ষমতার কবলে তাদেরকে বিশ্বের পরাশক্তি বলা হয়।

পামার ও পারকিন্স তাঁদের ‘International Relatio’ গ্রন্থে বলেন, “The term super power is one which has come into rather general use in the post world war Period.”

১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙনের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের একক পরাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়। আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সমকক্ষ কোনো রাষ্ট্রের অস্তিত্ব নেই বললেই চলে ।

■ নিম্নে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এর একক প্রাধান্যের কারণসমূহ আলোচনা করা হলো :

১। সমাজতন্ত্রের পতন :

১৯১৭ সালের বিশ্বের প্রথম সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসেবে সোভিয়েত ইউনিয়নের জন্ম হয়। পরবর্তীতে উত্তর পশ্চিম ও পূর্ব ইউরোপের অনেকগুলো রাষ্ট্রে সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৪৯ সালে চীনে সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব সফলতা লাভ করে। সোভিয়েত ইউনিয়ন ছিল সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্রের পুরোধা, পথ প্রদর্শক ও আলোকবর্তিকা। তাকে ঘিরে সমগ্র পৃথিবীর সমাজতান্ত্রিক নীতি, কর্মসূচি ও নির্দেশনা জারি করতো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সমাজতান্ত্রিক শিবিরের নেতৃত্ব দান করতো সোভিয়েত ইউনিয়ন।

কিন্তু ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নে সমাজতন্ত্রের পতনের সাথে সাথে বিভিন্ন রাষ্ট্রের সমাজতন্ত্রের পতন ঘটে। ফলে পুঁজিবাদী শিবিরের একমাত্র ধারক, বাহক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বব্যাপী একক প্রাধান্য প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হয়।

২। সোভিয়েত ইউনিয়নের ভাঙন :

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর পরাশক্তি হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোভিয়েত ইউনিয়ন আত্মপ্রকাশ করে। সুদীর্ঘ ৫০ বছরে দুই পরাশক্তির মধ্যে চলে স্নায়ুযুদ্ধ। এটি এমন একটি পরিবেশ-পরিস্থিতি তৈরি করে যেখানে যুদ্ধ না হলেও যুদ্ধের জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি চলে। চলাকালে উভয় দেশ উভয় দেশকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিতো। উভয় দেশ অস্ত্র প্রতিযোগিতা ও মারণাস্ত্র উৎপাদনে সমকক্ষ ছিল।

কিন্তু ১৯৯৮ ১৯৮৯ সালে সোবিয়েত ইউনিয়নের সামরিক বাহিনীর সংখ্যা হ্রাস, সামরিক কর হ্রাস, নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়া, গর্বাচেভের নীতি ইত্যাদি কারণে স্নায়ুযুদ্ধ দুর্বল হয়ে পড়ে। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নে ভাঙন ও সমাজতন্ত্রের পতন ঘটে। ফলশ্রুতিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী হয়।

৩। শক্তিশালী সামরিক বাহিনী :

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীর বৃহত্তম দক্ষ সামরিক বাহিনী গড়ে তুলেছে। তার সামরিক শক্তির সাথে অপর কোনো রাষ্ট্রের তুলনা করা যায় না। সে দেশের সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনী চৌকষ, দক্ষ এবং অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্রে সজ্জিত। সামরিক শক্তির ভয় দেখিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অন্যান্য রাষ্ট্রের উপর নিজেদের অধিকার বিস্তার করে চলেছে।

গণতন্ত্র ও শান্তি প্রতিষ্ঠার নামে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইরাক ও আফগানিস্তানে সামরিক শক্তি প্রয়োগ করেছে। তাছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তার সামরিক কর্তৃত্বের ফলে, হাইতি, পানামা, লিবিয়া, কেনিয়া, ডোমিনিকান, রিপাবলিকে সামরিক আগ্রাসন চালায়। সামরিক শক্তি এখনও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীর যেকোনো রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে থাকে।

পড়ুনঃ- একক শক্তি মার্কিন।

৪। ভৌগোলিক অবস্থানগত সুবিধা :

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভৌগোলিক অবস্থান তাকে বিশ্বের অপরাজেয় শক্তিতে পরিণত করেছে। ভৌগোলিক আয়তনে পৃথিবীর তৃতীয় স্থান অধিকার করলেও ক্ষমতার মাপকাঠিতে দেশটি সবার শীর্ষে। দেশটির পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগর এবং পূর্বে আটলান্টিক মহাসাগর দ্বারা বেষ্টিত থাকায় তার অবস্থান অত্যন্ত নিরাপদ। চারদিকে সাগর বেষ্টিত থাকায় বহিঃশক্তির দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ।

তাছাড়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে বিশাল সমতল ভূখণ্ড, বিপুল জনসংখ্যা, প্রাকৃতিক সম্পদ ও উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা। ভৌগোলিক অবস্থান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় শক্তি ও প্রভাব প্রতিপত্তি বৃদ্ধি করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আক্রমণের বয়ে কানাডা, মেক্সিকো ও ল্যাটিন আমেরিকার দেশগুলো উদ্বিগ্ন  থাকে। পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে আক্রমণের জন্য তার দেশের নৌপথ ও আকাশপথ সারাক্ষণ উন্মুক্ত রয়েছে ।

৫। পারমাণবিক শক্তির অধিকারী :

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীতে সর্বপ্রথম পারমাণবিক শক্তির অধিকারী হয় ১৯৪৫ সালেই ১৬ জুলাই পারমাণবিক বিস্ফোরণ ঘটায়। ১৯৪৫ সালের ৬ ও ৯ আগস্ট জাপানের হিরোসিমানাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের মাধ্যমে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সারা বিশ্বে আতঙ্ক ছড়িয়ে দেয়। পরবর্তীতে সোভিয়েত ইউনিয়ন ব্রিটেন, ফ্রান্স, চীন প্রভৃতি দেশ পারমাণবিক শক্তির অধিকারী হলেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে তারা টপকাতে পারেনি।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অস্ত্র নিয়ন্ত্রণের কথা বললেও নিজ দেশের পারমাণবিক কর্মসূচি এখনো পরিত্যাগ করতে পারেনি। যুক্তরাষ্ট্র যতদিন পর্যন্ত পারমাণবিক অস্ত্র ধ্বংস না করবে ততদিন পর্যন্ত সারাদেশ, পৃথিবীতে তার একচ্ছত্র প্রাধান্য বজায় থাকবে।

৬। আর্থিক সামর্থ্য :

পৃথিবীর অপরাপর রাষ্ট্র থেকে শক্তিশালী অবস্থানে রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। আর্থিক সামর্থ্যই তাকে পরাশক্তি হিসেবে প্রাধান্য বজায় রাখতে সহায়তা করছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আর্থিক সামর্থ্য আছে বলেই যে রাষ্ট্র সামরিক দিক থেকে শক্তিশালী। দেশের ভূখণ্ড জুড়ে রয়েছে অফুরন্ত প্রাকৃতিক ও খনিজ সম্পদ। দক্ষ জনশক্তির সাহায্যে যুক্তরাষ্ট্র সম্পদ আহরণ ও তার সুষ্ঠু ব্যবহার করে থাকে। যুক্তরাষ্ট্র দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা পূরণ করে বিপুল পরিমাণ সম্পদ বিদেশে রপ্তানি করে থাকে। এদেশের জাতীয় ও জীবনযাত্রার মান খুবই উন্নতমানের।

অপরিসীম সম্পদের অধিকারী থাকার কারণে দেশটি প্রতিরক্ষা ও সামরিক খাতে সর্বোচ্চ ব্যয় করে থাকে। পৃথিবীর সব দেশ সামরিক খাতে যে অর্থব্যয় করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেই ব্যয়ের ৭০ শতাংশ ব্যয় করে। বিশ্বের মোট জনসংখ্যার ১৩ শতাংশ লোকের নিরাপত্তার জন্য দেশটি শতাংশ অর্থ ব্যয় করে থাকে। তার রয়েছে আর্থিক স্বচ্ছলতা ও স্বয়ংসম্পূর্ণতা। তার কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অর্থনৈতিক, সামরিক, রাজনৈতিক, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিদ্যায় অগ্রণী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।

৭। পুঁজিবাদ ও গণতন্ত্রের প্রসার :

স্নায়ুযুদ্ধ চলাকালে বিশ্ব রাজনীতি দুটি শিবিরে দুটি মতাদর্শে বিভক্ত ছিল। এর একদিকে ছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে পুঁজিবাদ ও গণতান্ত্রিক মতাদর্শ এবং অপরদিকে ছিল সোভিয়েত ইউনিয়নের নেতৃত্বে সমাজতান্ত্রিক মতাদর্শ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্নায়ুযুদ্ধে জড়িয়ে পড়ার মূল উদ্দেশ্য ছিল পুঁজিবাদী বিশ্বকে সুসংহত ও সংরক্ষণ করা এবং গণতন্ত্রের প্রসার ঘটানো এ সময়কালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল প্ল্যান ছিল পুঁজিবাদ এবং গণতন্ত্র । এখনো গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠার অজুহাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীর বিভিন্ন স্বাধীন রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নগ্ন হস্তক্ষেপ করে চলছে। দেশটির একক প্রাধান্য প্রতিষ্ঠায় এটি এক অনন্য কৌশল।

৮। বিশ্বায়ন ও মুক্তবাজার অর্থনীতি

বিশ্বায়ন ও মুক্তবাজার অর্থনীতির ধারণা প্রসারের ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অপ্রতিহত প্রভাব-প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্বায়নের প্রভাবে সমগ্র পৃথিবী বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রের হাতের মুঠোয় চলে এসেছে। মুক্তবাজার অর্থনীতি দেশটির অর্থনৈতিক স্বার্থকে সমুন্নত রেখেছে এ ধরনের ব্যবস্থায় বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একক প্রাধান্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

মুক্তবাজার অর্থনীতির বদৌলতে দেশটি পৃথিবীর বিভিন্ন রাষ্ট্রে তার রাজনৈতিক প্রভাব বিস্তার করে চলেছে। বিশ্বব্যাপী খনিজ বৃদ্ধির ক্ষেতে দেশটির সাথে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বিশ্বব্যাপী খনিজ সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের সাথে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও জাপানের বিরোধ রয়েছে। তথাপি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন কলাকৌশল প্রয়োগ করে তার একমাত্র আধিপত্য বহাল রাখছে ।

৯। সাহায্য-সহযোগিতার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণ :

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র পৃথিবীর বহু রাষ্ট্রে সাহায্যের সাথে যুক্তরাষ্ট্র নানা প্রকার শর্ত আরোপ করে। সাহায্য গ্রহণ দেশকে যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক নির্ধারিত শর্ত অনুযায়ী সাহায্য গ্রহণ ও ব্যয় করতে হয়। তৃতীয় বিশ্বের বহু রাষ্ট্র সাহায্য গ্রহণ করার কারণে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রীয় নীতি ও আদর্শের প্রতি অনুগত থাকে।

অনেক রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রের সাহায্য-সহযোগিতা বন্ধের ভয়ে সে রাষ্ট্রের অন্যায় অবিচারের বিরুদ্ধে কোনো প্রতিবাদ করতে পারে না। বিভিন্ন আর্থিক সাহায্য-সহযোগিতার মাধ্যমে দেশটি সারা পৃথিবীর উপর একক প্রাধান্য প্রতিষ্ঠা করেছে।

১০। তথ্যপ্রযুক্তি ও মিডিয়া নিয়ন্ত্রণ :

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছে। তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশটি বিশ্বের রাষ্ট্রগুলোর উপর প্রভাব বিস্তার করেছে।

ইরাক, কুয়েত যুদ্ধের সময় ইরাকের বিরুদ্ধে এবং আফগানিস্তানের তালেবানদের বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে রাষ্ট্র তথ্য সন্ত্রাস চালায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কর্তৃক আবিষ্কৃত তথ্য প্রযুক্তি বিভিন্ন অপ্রতিহত আধিপত্যের কারণে দেশটি সবচেয়ে বেশি সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছে CNN, BBC, ABC, TMEVOA প্রভৃতি নিউজ মিডিয়াগুলো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ হয়ে কাজ করে যাচ্ছে ।

১১। জোট গঠন :

১৯৪৮ সালে জার্মানির সমস্যা নিয়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও সোবিয়েত ইউনিয়নের মধ্যে দ্বন্দ্ব বিরোধ তীব্র আকার ধারণ করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৯৪৯ সালের ৪ এপ্রিল পশ্চিমা রাষ্ট্রসমূহের সমন্বয়ে উত্তর আটলান্টিক চুক্তি সংস্থা (NATO) গঠন করে। এ চুক্তির মূল উদ্দেশ্য ছিল পশ্চিম ইউরোপে কমিউনিস্ট প্রভাব প্রতিরোধ করা।

১৯৯১ সালে সোবিয়েত ইউনিয়ন‘এর পতন ঘটে এর নেতৃত্বে গঠিত WARSAW প্যাক্ট বিলুপ্ত হলেও NATO এখনো টিকে আছে। পরবর্তীকালে রাশিয়াসহ আরো কয়েকটি রাষ্ট্র NATO-তে যোগদান করে। ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র প্রভাব প্রতিপত্তি বৃদ্ধিতে সক্ষম হয়েছে। এছাড়া দেশটি সিয়াটো (SEATO), সেন্টো (CENTO), ন্যাফটা (NAFTA) ইত্যাদি জোটের অন্যতম অংশীদার।

১২. আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সংস্থাসমূহ নিয়ন্ত্রণ :

১৯৪৪ সালের জুলাই মাসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নিউ হ্যাম্পশায়ারে ব্রিটেন উডসে সম্মেলনে দুটি সংস্থা গঠনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যথা : IBRD এবং IMF এই সংস্থাগুলো উন্নয়নশীল দেশগুলোর স্বার্থে গঠিত হলেও মূলত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণমূলক উদ্দেশ্যেই ব্যবহৃত হয়। তাছাড়া WTO, NAFTA, FPEC প্রভৃতি সংস্থাগুলোকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ক্ষুদ্র দেশগুলোর জাতীয় অর্থনীতি, রাজনীতি, ব্যবসা-বাণিজ্য ইত্যাদি নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবহার করে।

পরিশেষে বলা যায়

যে, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একক পরাশক্তি হিসেবে আবির্ভূত হওয়ার অন্যতম কারণ হলো বিশ শতাব্দীর শেষ দশকে সমাজতান্ত্রিক দেশগুলোর পতন। এর ফলশ্রুতিতে একমাত্র পুঁজিবাদী শক্তির ধারক ও বাহক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিজয় অর্জিত হয়।

তবে বর্তমান বিশ্বের রাজনীতিতে বহুমেরুকরণের প্রবণতা শুরু হয়েছে বলে এ কথা বলা যায়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে ইউরোপীয় ইউনিয়নের জন্ম হয়েছে। চীন, জাপান, জার্মানি দিন দিন অর্থনৈতিকভাবে শক্তিশালী হচ্ছে। এমনকি বিশ্ব মুড়ল আজ তালেবানদের হাতে মার খেয়ে আফগান ছেড়েছে।

NO COMMENTS

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

error: Content is protected !!
Exit mobile version