বরফ গলা নদী
লেখক: জহির রায়হান
জনরা: সামাজিক উপন্যাস
প্রকাশক: অনুপম প্রকাশনী
প্রথম প্রকাশ: ১৯৬৯ সাল
পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৯৬
মুদ্রিত মূল্য: ১২০ টাকা
আজকে রিভিউ করছি বাংলাদেশের একজন স্বনামধন্য চলচ্চিত্র পরিচালক, ঔপন্যাসিক এবং গল্প রচয়িতা জহির রায়হানের বিখ্যাত উপন্যাস, “বরফ গলা নদী”। বইটি রিভিউ করার পূর্বে কাহিনীর প্লট একটু বর্ণনা করে নিচ্ছি।
মরিয়ম নিম্ন-মধ্যবিত্ত ঘরের মেয়ে। পরিবারের ভরণপোষণের দায়িত্ব নেওয়ার চেষ্টা করে টিউশনি করে। তার পরিবারে আছে বাবা হাসমত আলী, অফিসের সামান্য কেরানীর চাকরি করেন; মা সালেহা বিবি; বড় ভাই মাহমুদ, একজন সাংবাদিক; ছোট ভাইবোন খোকন আর দুলু। বিশাল এই পরিবারের ব্যয়ভার চালাতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয় তাদের সবাইকে।
মরিয়ম টিউশনি পড়ায় সেলিনাকে। সেলিনার পরিবার বেশ ধনী। সেলিনার বড় বোনের দেবর মনসুর মরিয়মকে পছন্দ করে। মরিয়ম বিষয়টা বুঝতে পারলেও কখনো কোনো আগ্রহ প্রকাশ করে না।এর কারণ জাহেদ। জাহেদের কারণে মরিয়মের মনের মধ্যে বিতৃষ্ণা জন্মে গেছে পুরুষ জাতির উপরে। যদিও তার মায়ের খুব ইচ্ছা, মনসুরের সাথে তার বিয়ে যাতে হয়।
অন্যদিকে মাহমুদ ধনী জাতিকে দুই চোখে দেখতে পারে না। এর কারণ অবশ্য পরিবারের দারিদ্রতা। সে শিক্ষিত, তারপরেও মনের মতো চাকরি পাচ্ছে না। পরিবারের বন্ধনও তার কাছে আলাদা কোনো অর্থবহন করে না।
মরিয়ম, মনসুর, মাহমুদ, সেলিনা, এদের সবাইকে নিয়েই সুন্দর উপন্যাস, “বরফ গলা নদী”।
আমার অনুভূতি:
মরিয়মের পরিবারের মতো নিম্ন- মধ্যবিত্ত পরিবার আমাদের আশেপাশেই আছে। তাদের জীবনটা কীভাবে কাটে, এই বইটা পড়ে সেটা খুব ভালোমতো বোঝা যায়। তাছাড়া সেই সময়ে মানুষের জীবনযাপন কেমন ছিল, সেটা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়।
বইটা পড়ার পর মনে হয়েছিল, এমন গল্প আমার কত পরিচিত। এতো সাধারণ, সহজ, সরল, বাস্তব কাহিনী যে কাহিনীর ভেতরে ডুবে যেতে সময় লাগে না। আর চরিত্রের রূপায়ণ ছিল অসাধারণ। চরিত্রগুলোকে মনে হয়েছে অনেক দিনের চেনা।
কিন্তু বইটা শেষ করার পরে আমার মনে কিছু প্রশ্ন থেকে গিয়েছে। বই খুঁজেও মনের মতো উত্তর আমি পাইনি। এটা হয়তো পাঠক হিসেবে আমার অপারগতা। কাহিনীর এই অংশটুকু উল্লেখ করছি না। নতুন পাঠক যারা আছেন, তাদের জন্য স্পয়লার হয়ে যেতে পারে।
শেষ কথা:
জহির রায়হানের অন্যসব বইয়ের মতো “বরফ গলা নদী” বইটিও নিজের বৈশিষ্ট্যে অনন্য। একটা মধ্যবিত্ত পরি।